ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ ভাদ্র ১৪৩২, ২৬ আগস্ট ২০২৫, ০২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

অর্থনীতি-ব্যবসা

১ মিলিয়ন ডলার দিতেই হবে ফরসেটিকে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩:০৭, অক্টোবর ১১, ২০১৭
১ মিলিয়ন ডলার দিতেই হবে ফরসেটিকে বাংলাদেশ ব্যাংক

ঢাকা: জাহাজ বিক্রয়ের আর্ন্তজাতিক এজেন্ট ফরসেটি ইনক’র বিরুদ্ধে গ্রিসের আদালতে জালিয়াতি ও অর্থপাচারে অভিযোগ উঠলেও তাদেরকে আগে পরিশোধকৃত অর্থের বাইরে এখন আবার নতুন করে আরো ১১ লাখ ডলার পরিশোধ করতে হবে। কারণ এরই মধ্যে তাদেরকে এই টাকা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত আদেশ দিয়েছেন।
 

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে তা আমরা মানতে বাধ্য।
 
বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ফরসেটির কাছে পাচার হয়ে চলে গেলে সে অর্থ সন্ত্রাসের অর্থায়নে ব্যয় হতে পারে আশঙ্কায় তা না পাঠানোর আবেদন করেছে লেনচেস্টার এক্সপোর্ট নামের একটি জাহাজ বিক্রয়কারি প্রতিষ্ঠান।


 
এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থপাচার প্রতিরোধ বিভাগ বাংল‍াদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট’র মহাব্যবস্থাপকের কাছে সোমবার (৯ অক্টোবর) একটি আবেদন করেছেন লেনচেস্টার এক্সপোর্ট’র দক্ষিণ এশীয় আইনজীবী বিভু দাশ ।
 
আবেদনে বলা হয়েছে,  ২০০৫ সালে লেনচেস্টার এক্সপোর্ট কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ট্রেডকো গ্লোব্যালের কাছ থেকে গ্রিসের তিন এজেন্টের মাধ্যমে এমভি এআই জর্জ নামের একটি জাহ‍াজ ক্রয় করে।  
 
পানজিওতিস লিরাকোস, দিমিরোস নমিকোস এবং মিজ এভেনজিলা লিরাকোস নামের এই  তিন এজেন্টের মাধ্যমে জাহাজ বিক্রির লেনদেন সম্পন্ন করা হয়। তাদেরই প্রতিষ্ঠান ফরসেটি ইনক জাহাজের মালিকানা দাবি করে বাংলাদেশের আদালতে মামলা করে।
 
ফরসেটি ইনক’র মামলার পর লেনচেস্টার এক্সপোর্ট ভারতের আইসিআইসিআই ব্যাংকের কানাডা শাখার মাধ্যমে জামানত হিসেবে বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের ইস্টার্ন ব্যাংকে ১১ লাখ মার্কিন ডলার জমা রাখে।
 
বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ফরসেটি ইনককে এই টাকা পরিশোধের  নির্দেশ দিয়েছেন।
 
এই রায় ঘোষণার পরও গ্রিসের আদালতে ফরসেটি ইনক’র বিরুদ্ধে থাকা একটি মামলার সর্বশেষ খবর জানিয়ে অর্থ স্থানান্তর না করার অনুরোধ জানিয়ে আবেদন করেছেন লেনচেস্টারের দক্ষিণ এশীয় আইনজীবী বিভু দাশ।
 
কেন্দ্রীয় ব্যাংককে বিভু দাশ লিখেছেন, ফরসেটি ইনক এবং তিনজন আলাদা ব্যক্তি একই চক্রের ‍ সদস্য। তারা যৌথভাবে লেনচেস্টারের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। অভিযোগটি গ্রিসের আদালতে এরই মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। এখন শুধু রায়ের অপেক্ষা।
 
আবেদনে তিনি আরও লিখেছেন, গ্রিসের আদালত এরই মধ্যে আলাদা তিন ব্যক্তি এবং ফরসেটি ইনক যে একই  চক্র তা সনাক্ত করেছে। এই তিন ব্যক্তি মূলত জাহাজ বিক্রির এজেন্ট হিসাবে কাজ করে থাকেন। তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই জামানত হিসেবে লেনচেস্টারের জমা দেওয়া অর্থ যেন ফরসেটি ইনক নামের প্রতারক প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া না হয়।
 
লেনচেস্টার এক্সপোর্টকে আইনি সহায়তাদানকারী প্রতিষ্ঠান ডিটিডিএ অ্যান্ড  অ্যাসোসিয়েটস’র আইনজীবী  বিভু দাশ বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো আবেদনে ওই তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রিসের আদালতে বিচারাধীন অভিযোগের নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত টাকা না পাঠাতে অনুরোধ করেছেন।
 
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের দেশের আদালত যে নির্দেশ দিয়েছে আমরা তা মানতে বাধ্য। আদালতের রায়ের বাইরে গিয়ে আমাদের কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ নেই।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১৭
এসই/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।